"বাংলাদেশ বনাম ভারত: এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের হাইভোল্টেজ লড়াই"

বাংলাদেশ বনাম ভারত: এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের উত্তেজনাপূর্ণ লড়াই


**শিলং থেকে বিশেষ প্রতিবেদন**

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ফুটবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা দীর্ঘদিনের। দুই দলের লড়াই সবসময়ই উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে, এবং এবারের এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচও তার ব্যতিক্রম নয়। শিলংয়ের পুলিশ বাজারের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ভিভান্তা হোটেলে দুই দলের সংবাদ সম্মেলন সৌজন্যপূর্ণ হলেও, মাঠে নামার পর সেই সৌজন্যতার কোনো স্থান থাকবে না। দুই দলই ম্যাচ জয়ের জন্য মরিয়া, আর এরই মাঝে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে দুই তারকা খেলোয়াড়—সুনীল ছেত্রী ও হামজা চৌধুরী।

বাংলাদেশ দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ও অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, দলটি শুধুমাত্র অংশগ্রহণের জন্য নয়, জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামবে। শিলংয়ে অনুশীলন মাঠ সংক্রান্ত কিছু সমস্যা থাকলেও, তারা সেগুলোকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাতে চান না। কাবরেরা জানান, সৌদি আরবে ক্যাম্প করার ফলে দলের প্রস্তুতি ভালোভাবেই সম্পন্ন হয়েছে।

হামজা চৌধুরীর অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশ দলে নতুন শক্তি যোগ করেছে। ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করা এই মিডফিল্ডার লেস্টার সিটির খেলোয়াড় এবং বর্তমানে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে খেলছেন। বাংলাদেশ দলে তার উপস্থিতি শুধুমাত্র কৌশলগত সুবিধাই এনে দেবে না, বরং মনোবলও বৃদ্ধি করবে। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া মনে করেন, হামজার অন্তর্ভুক্তি পুরো দলকে অনুপ্রাণিত করবে এবং সবাই একসঙ্গে ম্যাচটি জেতার জন্য মুখিয়ে আছে।

ভারতীয় দলে অন্যতম আকর্ষণ সুনীল ছেত্রীর প্রত্যাবর্তন। আট মাস পর দলে ফিরে তিনি ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়। ভারতীয় কোচ মানোলো মার্কেজ সংবাদ সম্মেলনে জানান, বাংলাদেশ দলকে তারা যথেষ্ট সম্মান করেন, তবে তাদের লক্ষ্য একটাই—জয়।

ভারতের জন্য একটি সুবিধা হলো তাদের আইএসএল (ইন্ডিয়ান সুপার লিগ) থেকে উঠে আসা প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা। সন্দেশ ঝিঙ্গান, অনিরুদ্ধ থাপা ও ছেত্রীর মতো খেলোয়াড়দের নিয়ে দলটি শক্তিশালী অবস্থানে আছে। ভারতীয় দলের লক্ষ্য থাকবে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে বাংলাদেশের রক্ষণভাগকে ভাঙা।

**হামজা বনাম ছেত্রী: প্রতিদ্বন্দ্বিতার নতুন মাত্রা** 


বাংলাদেশ বনাম ভারত ম্যাচ মানেই উত্তেজনা। তবে এবারের ম্যাচে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী ও ভারতের ফরোয়ার্ড সুনীল ছেত্রীর মধ্যে। হামজা যেখানে বাংলাদেশের রক্ষণ ও মিডফিল্ডের অন্যতম ভরসা, সেখানে ছেত্রী ভারতের গোলস্কোরিং মেশিন। দুইজনই অভিজ্ঞ এবং নিজেদের দলের মূল শক্তি।

 

**ম্যাচের ফলাফল ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা**


বাংলাদেশ দল সর্বশেষ ২০০৩ সালে ভারতের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল। এরপর বেশ কয়েকবার ভারত বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ী হয়েছে বা ম্যাচ ড্র হয়েছে। তবে এবার বাংলাদেশ দল অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। এই ম্যাচের ফলাফল এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে দুই দলের ভবিষ্যত নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ কি দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ভারতের বিপক্ষে জয় পাবে, নাকি ছেত্রীর নেতৃত্বে ভারতীয় দল আবারও তাদের আধিপত্য বজায় রাখবে—তা দেখার জন্য ফুটবলপ্রেমীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।


*

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post